28 Apr 2024, 10:30 pm

যাকাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত ও হাদীসে রসুল (সঃ) এর বাংলা অর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“আর নামায কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর।” (সূরা ঃ বাকারা ঃ আয়াত ঃ ৪৩)
“অথচ তাদেরকে এমনি হুকুম দেয়া হয়েছিল যে, তারা মহান আল্ল­াহর ইবাদাত এমনভাবে করবে যাতে তা একমুখী হয়ে মহান আল্ল­াহর জন্য নির্ধারিত হয়ে যায়। আর তারা যেন নিয়মিতভাবে নামায পড়ে ও যাকাত আদায় করে। এটিই হচ্ছে সঠিক দ্বীন। ” (সূরা ঃ বাইয়্যেনা ঃ আয়াত ঃ ৫)।
“তাদের ধন-সম্পদ থেকে সাদকা গ্রহণ কর, যার সাহায্যে তুমি তাদেরকে গুনাহমুক্ত করবে এবং তাদেরকে পাক-পবিত্র করে দেবে।” (সুরা ঃ তাওবা ঃ আয়াত ঃ ১০৩)।

১. হযরত ইবনে উমার রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেন, পাঁচটি বস্তুর ওপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত। ১। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, মহান আল্ল­াহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম তাঁর বান্দা ও রসূল, ২। নামায কায়েম করা, ৩। যাকাত আদায় করা, ৪। বাইতুল্ল­াহে হজ্জ করা, ৫। রমযানের রোযা রাখা। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. হযরত তালহা ইবনে উবাইদুল­াহ রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক নজদবাসী রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম-এর নিকট এলেন, তাঁর মাথার চুলগুলো ছিল এলোমেলো। তাঁর শব্দ আমাদের কানে আসছিল কিন্তু তিনি কি বলছিলেন তা বুঝা যাচ্ছিল না। তিনি রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম-এর নিকটবর্তী হলেন। তিনি ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন। রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম তার উত্তরে বললেন, সারা রাতদিন পাঁচবার নামায (ফরয)। তিনি প্রশ্ন করলেন, এগুলো ছাড়া আরো কোন নামায কি আমার ওপর ফরয? রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম জবাব দিলেন, না আর কোন নামায ফরয নেই। তবে তুমি নফল নামায চাইলে পড়তে পার। অতঃপর রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বললেন, রমযানের রোযাও (ফরয)। লোকটি প্রশ্নে করলেন, এছাড়া আর কোন রোযা কি আমার ওপর ফরয? উত্তর দিলেন, না আর কোন রোযা ফরয নেই। তবে ইচ্ছে করলে নফল রোযা রাখতে পার।রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম তাঁর সামনে যাকাতের কথা বললেন। লোকটি প্রশ্ন করলেন, এছাড়া আর কোন সদকা কি আমার ওপর ফরয? উত্তর দিলেন, না আর কোন সদকা ফরয নেই। তবে যদি তুমি চাও নফল সদকা করতে পার। অতঃপর লোকটি এ কথা বলতে বলতে চলে গেলেন, মহান আল্ল­াহর কসম! আমি এর ওপর কিছু বাড়াবো না এবং এর থেকে কিছু কমাবোও না। এ কথা শুনে রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেন, যদি এ ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে এ কথা বলে থাকে তাহলে সে সফলকাম হয়ে গেছে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।
৩. হযরত ইবনে উমার রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেছেন, আমাকে লোকদের সাথে যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, মহান আল্ল­াহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম মহান আল্ল­াহর রসূল আর যে পর্যন্ত তারা নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়। আর যখন তারা এগুলো করবে তখন তাদের রক্ত ও সম্পদকে তারা আমার কাছ থেকে সংরক্ষিত করে নিবে এবং তাদের হিসেব-নিকেশ হবে মহান আল্ল­াহর নিকট। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।
৪. হযরত আবূ আইউব রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামকে বললেন, আমাকে এমন আমলের কথা জানান যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি উত্তর দিলেন, মহান আল্ল­াহর ইবাদাত কর, তাঁর সাথে আর কোন কিছুকে শরীক করো না, নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এবং আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার কর। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।
৫. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। এককার জনৈক ব্যক্তি রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম-এর নিকট এলেন এবং বললেন, ইয়া রসুলুল্ল­াহ ! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যা করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বললেন, মহান আল্ল­াহর ইবাদাত কর, তাঁর সাথে আর কোন কিছুকে শরীক করো না, নিয়মিত নামায পড়, ফরয যাকাত আদায় কর এবং রমযানের রোযা যাখ। সে ব্যক্তি বলল, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি এর ওপর কিছুই বৃদ্ধি করব না। তারপর সে যখন ফিরে যেতে লাগল রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বললেন, যে ব্যক্তি জান্নাতের কোন অধিবাসীকে দেখে নয়ন জুড়াতে চায় যে ঐ লোকটিকে দেখতে পারে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।
৬. হযরত জারীর ইবনে আবদুল­াহ রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম – এর হাতে বাই’আত গ্রহণ করেছিলাম নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ও প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ কামনার ওপর। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।
৭. হযরত জারীর ইবনে আবদুল­াহ রাদিয়াল্ল­াহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমিরসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম-এর হাতে বাই’আত গ্রহণ করেছিলাম নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ও প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ কামনার ওপর। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4888
  • Total Visits: 675824
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1122

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
  • ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১০:৩০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
2930     
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018